কোনো শীর্ষক নেই

 

67


সালাতুল-তাসবী নিয়ত

 


সালাতুল-তাসবী চার-রাক'আত সুন্নত নামাজের নিয়ত সমূহঃ
আরবি-উচ্চারন
نَوَايْتُ اَنْ اُصَلِّىَ لِلَّّهِ تَعَالَى ارْبَعَ رَكَعَاتِ صَلَوةِ التَّسْبِيْحِ سُنَّةُ رَسُوْلِ اللَّهِ تَعَالَى مُتَوَجِّهًا اِلَى جِهَةِ الْكَعْبَةِ الشَّرِيْفَةِ اَللَّهُ اَكْبَرُ

বাংলা-উচ্চারন
নাওয়াইতু আন উসালি্লয়া লিল্লাহি তা’আলা আরবা’আ রাকা’আতাই সালাতিল সালাতুল-তাসবী সুন্নাতু রাসূলিল্লাহি তা’আলা মুতাওয়াজ্জিহান ইলাজিহাতিল কাবাতিশ শারীফাতি আল্লাহু আকবার।

বাংলা অর্থ
আমি সালাতুল-তাসবী -চার-রাক'আত সুন্নত নামাজ আদায় করার উদ্দেশ্যে কিবলামুখী হয়ে নিয়্যত করলাম,আল্লাহু আকবার।

সালাতুল-তাসবী দোয়া
আরবি-উচ্চারন
سُبْحاَنَ الله وَالْحَمدُ للهِ وَلآَ اِلَهَ اِلاَّاللهُ وَاللهُ اَكْبرُ

বাংলা-উচ্চারন
সুবহানাল্লা-হি ওয়ালহামদু লিল্লা-হি ওয়া লা-ইলাহা ইল্লাল্লা-হু ওয়াল্লা-হু আকবার।

সালাতুল-তাসবী এর বিবরন
সালাতুত তাসবিহ হাদীস শরীফে ‘সালাতুত তাসবীহ’ নামাযের অনেক ফযীলত বর্ণিত আছে। এই নামায পড়লে পূর্বের গুনাহ বা পাপ মোচন হয় এবং অসীম সওয়ার পাওয়া যাবে। রাসূলুল্লাহ সালল্লাহু তা’আলা আলাইহি ওয়া সাল্লাম স্বীয় চাচা হযরত আব্বাস রাদিআল্লাহু আনহুকে এই নামায শিক্ষা দিয়েছিলেন এবং বলেছিলেন যে, এই নামায পড়লে আল্লাহ আয-যাওযাল আপনার আউয়াল আখেরের সগীরা কবীরা জানা অজানা সকল গুনাহ মাফ করে দিবেন।
তিনি বলেন, চাচা জান ! আপনি যদি পারেন, তবে দৈনিক একবার করে এই নামায পড়বেন। যদি দৈনিক না পারেন, তবে সপ্তাহে একবার পড়বেন। যদি সপ্তাহে না পারেন, তবে মাসে একবার পড়বেন। যদি মাসে না পারেন, তবে বছরে একবার পড়বেন। যদি এটাও না পারেন, তবে সারা জীবনে একবার হলেও এই নামায পড়বেন ।
সালাতুল তাসবিহ নামাজের নিয়ম- চার রকাত । প্রতি রকাতে সূরা ফাতিহার পর, যে কোন সূরা পড়তে পারেন। তবে এই নামাযে বিশেষত্ব এই যে, প্রতি রকাতে ৭৫ বার করে, চার রকাতে মোট ৩০০ বার তাসবীহ পড়তে হবে।

মোট ৩০০ বার উপর্যুক্ত তাসবীহ পড়ার নিয়ম

১.প্রথম-রাকাত এ সানা পড়ার পরে তাসবীহ টি ১৫ বার পড়তে হবে।
২.তারপর স্বাভাবিক নিয়মে সুরা ফাতিহা ও অন্য আরেকটি সুরা অথবা অন্তত তিন আয়াত পড়ার পরে তাসবীহ টি ১০ বার পড়তে হবে ।
৩.এরপর রুকুতে গিয়ে রুকুর তাসবীহ পরার পরে তাসবীহ টি ১০ বার পড়তে হবে।
৪.এরপর রুকু হতে দাড়িয়ে গিয়ে “রাব্বানা লাকাল হামদ” পড়ার পরে তাসবীহ টি ১০ বার পড়তে হবে ।
৫.এরপর সিজদায় গিয়ে সিজদার তাসবীহ পরে তাসবীহ টি ১০ বার পড়তে হবে ।
৬. প্রথম সিজদা থেকে বসে তাসবীহ টি ১০ বার পড়তে হবে ।
৭.এরপর আবার সিজদায় গিয়ে সিজদার তাসবীহ পরে তাসবীহ টি ১০ বার পড়তে হবে ।
৮. তারপর একই ভাবে ২য় রাকাত পড়তে হবে,সুরা ফাতিহা পড়ার আগে তাসবীহ টি ১৫ বার পড়তে হবে ।
৯.অতপর ২য়রাকাত এর ২য় সিজদার পর “আত্তহিয়্যাতু…”,দরুদ আর দোয়া পড়ার পরে সালাম না ফিরিয়ে ,২য় রাকাত এর মতো ৩য় এবং ৪থ রাকাত একই প্রক্রিয়া শেষ করতে হবে (তাসবীহ টি ১৫ বার পড়ে স্বাভাবিক নিয়মে সুরা ফাতিহা ও অন্য আরেকটি সুরা পড়তে হবে)।


বিঃদ্রঃ-কোন এক স্থানে উক্ত তাসবীহ পড়তে সম্পূর্ণ ভুলে গেলে বা ভুলে নির্দিষ্ট সংখ্যার চেয়ে কম পড়লে পরবর্তী যে রুকনেই স্মরণ আসুক সেখানে তথাকার সংখ্যার সাথে এই ভুলে যাওয়া সংখ্যাগুলোও আদায় করে নিবে। আর এই নামাযে কোন কারণে সাজদায়ে সাহু ওয়াজিব হলে সেই সাজদা এবং তার মধ্যকার বৈঠকে উক্ত তাসবীহ পাঠ করতে হবে না। তাসবীহের সংখ্যা স্মরণ রাখার জন্য আঙ্গুলের কর গণনা করা যাবে না, তবে আঙ্গুল চেপে স্মরণ রাখা যেতে পারে।

68


কুসূফ নামাজের নিয়ত

 


কুসূফের দুই-রাক'আত সুন্নত নামাজের নিয়ত সমূহঃ
● আরবি-উচ্চারন
نَوَايْتُ اَنْ اُصَلِّىَ لِلَّّهِ تَعَالَى رَكْعَتَىْ صَلَوةِ الْكُسُوْفِ سُنَّةُ رَسُوْلِ اللَّهِ تَعَالَى مُتَوَجِّهًا اِلَى جِهَةِ الْكَعْبَةِ الشَّرِيْفَةِ اَللَّهُ اَكْبَرُ

● বাংলা-উচ্চারন
নাওয়াইতু আন উসালি্লয়া লিল্লাহি তা’আলা রাকা’আতাই সালাতিল কুসূফি সুন্নাতু রাসূলিল্লাহি তা’আলা মুতাওয়াজ্জিহান ইলাজিহাতিল কাবাতিশ শারীফাতি আল্লাহু আকবার।

● বাংলা অর্থ
আমি কিবলামুখী হয়ে আল্লাহর উদ্দেশ্যে দুই রাকাত কুসূফের নামাজ আদায় করছি। আল্লাহু আকবার।

● কুসূফ নামাজ এর নিয়ম
সূর্য গ্রহণকালে যেই দুই রাকাত সুন্নাতে গায়রে মু'আক্কাদা নামাজ আদায় করা হয়ে থাকে, তাকে সালাতুল কুসূফ বলা হয়।
এই নামাজ একা একা আদায় করা যায় এবং জামায়া'তের সাথেও আদায় করা যায়। তবে এতে আযান ও ইকামতের প্রয়োজন নেই। এই নামাজ পুরুষরা মসজিদে গিয়ে আদায় করবে আর মহিলারা নিজ নিজ ঘরে আদায় করবে। এই নামাজের ইমামতি ইসলামী রাষ্ট্র হলে সরকারি প্রতিনিধি করবে অন্যথায় মহল্লার ইমাম সাহেব করবে।
এই নমাজে নিঃশব্দে লম্বা কিরাত পড়া ও লম্বা রুকু সিজদা করা সুন্নাত। নামাজ শেষ হলে ইমাম সাহেব কিবলামুখী অথবা মুক্তাদীদের দিকে ফিরে, দাঁড়িয়ে বা বসে সকলে আল্লাহর দরবারে হাত তুলে কান্নাকাটি সহকারে যতৰণ সূর্য গ্রহণ থাকবে ততক্ষণ দু'আ মুনাজাত করতে থাকবে। সূর্যগ্রহণ ছুটে গেলে মুনাজাত

69


খুসূফ নামাজের নিয়ত

 


খুসূফের দুই-রাক'আত সুন্নত নামাজের নিয়ত সমূহঃ

● আরবি-উচ্চারন
نَوَايْتُ اَنْ اُصَلِّىَ لِلَّّهِ تَعَالَى رَكْعَتَىْ صَلَوةِ الْخُسُوْفِ سُنَّةُ رَسُوْلِ اللَّهِ تَعَالَى مُتَوَجِّهًا اِلَى جِهَةِ الْكَعْبَةِ الشَّرِيْفَةِ اَللَّهُ اَكْبَرُ
● বাংলা-উচ্চারন
নাওয়াইতু আন উসালি্লয়া লিল্লাহি তা’আলা রাকা’আতাই সালাতিল খুসূফি সুন্নাতু রাসূলিল্লাহি তা’আলা মুতাওয়াজ্জিহান ইলাজিহাতিল কাবাতিশ শারীফাতি আল্লাহু আকবার।

● বাংলা অর্থ
আমি কিবলামুখী হয়ে আল্লাহর উদ্দেশ্যে দুই রাকাত খুসূফের নামাজ আদায় করছি।আল্লাহু আকবার।

● খুসূফ নামাজ এর নিয়ম
চন্দ্র গ্রহণকালে দুই রাকাত নামাজ আদায় করতে হয়, তাকে খুসূফের নামাজ বলে। এই নামাজ ঘরে একাকী আদায় করতে হয়। মহিলারাও এই নামাজ পড়তে পারে। এই নামাজের প্রতি রাকাতে কিরাত নিঃশব্দে পড়তে হয়।
নামাজ শেষ করতঃ চন্দ্র গ্রহণ শেষ না হওয়া পর্যন্ত হাত তুলে আল্লাহু দরবারে প্রার্থনা করতে হয়। এরূপ দুর্ঘটনা বা বালা মুসীবত দেখা দিলে এই নামাজ আদায় করা যায়, যেমন-
যানবাহনে দুর্ঘটনা, বজ্রপাত, ঝড়-তুফান, অতি বৃষ্টিপাত, শীলাবৃষ্টি, বরফ পড়া, কলেরা- বসন্ত ইত্যাদি। এই নামাজ ও সুন্নাত।

70


ইসতিসকা নামাজের নিয়ত

 


ইসতিসকা দুই-রাক'আত সুন্নত নামাজের নিয়ত সমূহঃ
● আরবি-উচ্চারন
نَوَايْتُ اَنْ اُصَلِّىَ لِلَّّهِ تَعَالَى رَكْعَتَىْ صَلَوةِ اْلاِسْتِسْقَاءِ سُنَّةُ رَسُوْلِ اللَّهِ تَعَالَى مُتَوَجِّهًا اِلَى جِهَةِ الْكَعْبَةِ الشَّرِيْفَةِ اَللَّهُ اَكْبَرُ

● বাংলা-উচ্চারন
নাওয়াইতু আন উসালি্লয়া লিল্লাহি তা’আলা রাকা’আতাই সালাতিল ইসতিসকা সুন্নাতু রাসূলিল্লাহি তা’আলা মুতাওয়াজ্জিহান ইলাজিহাতিল কাবাতিশ শারীফাতি আল্লাহু আকবার।

● বাংলা অর্থ
আমি কিবলামুখী হয়ে আল্লাহর উদ্দেশ্যে দুই রাকাত ইসতিসকা নামাজ আদায় করছি। আল্লাহু আকবার।

● ইসতিসকা নামাজ নামাজ এর নিয়ম
ইসতিসকা অর্থ পান করার জন্য পানি প্রার্থনা করা। শরিয়তের পরিভাষায় ব্যাপক খরা ও অনাবৃষ্টির সময় বিশেষ পদ্ধতিতে সালাতের মাধ্যমে আল্লাহর কাছে পানি প্রার্থনা করাকে 'সালাতুল ইসতিসকা' বলা হয়।
ষষ্ঠ হিজরির রমজান মাসে সর্বপ্রথম মদিনায় ইসতিসকার সালাতের প্রবর্তন হয়। মলিন ও পুরনো পোশাক পরে চাদর গায়ে দিয়ে বিনয়-নম্র চিত্তে সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে ময়দান অভিমুখে রওনা হবে। সঙ্গে ইমামের জন্য মিম্বর নিতে পারবে। অতঃপর নিম্নের যে কোনো একটি পদ্ধতি অবলম্বনে ইসতিসকার সালাত আদায় করবে।

ইসতিসকার পদ্ধতি-১ : ঈদের সালাতের মতো আজান ও ইকামত ছাড়াই প্রথমে জামাতের সঙ্গে দুই রাকাত সালাত আদায় করবে। ইমাম উচ্চৈঃস্বরে কেরাত পড়বেন। প্রথম রাকাতে সূরা আলা ও দ্বিতীয় রাকাতে সূরা গাশিয়াহ কিংবা অন্য যে কোনো সূরা পড়বেন। অতঃপর সালাত শেষে ইমাম মিম্বরে বসে বা দাঁড়িয়ে অথবা মিম্বর ছাড়াই মাটিতে দাঁড়িয়ে প্রথমে আল্লাহু আকবর, আলহামদু লিল্লাহি রাবি্বল আলামিন ওয়াস সালাতু ওয়াসসালামু 'আলা রাসূলিহিল কারিম' বলে আল্লাহর প্রশংসা ও রাসূল (সা.) এর ওপর দরুদ পাঠ শেষে মুসলি্লদের প্রতি ইসতিসকার গুরুত্ব সম্পর্কে ঈমানবর্ধক উপদেশসহ সংক্ষিপ্ত খুতবা দেবেন।' (আবু দাউদ )
অতঃপর ইমাম ও মুক্তাদি সবাই কিবলামুখী দাঁড়িয়ে নিজ নিজ চাদর উল্টাবে। অর্থাৎ চাদরের নিচের অংশ উপরের দিকে উল্টে নেবেন এবং চাদরের ডান পাশ বাম কাঁধে ও বাম পাশ ডান কাঁধে রাখবে। অতঃপর দু'হাত উপুড় অবস্থায় সোজাভাবে চেহারা বরাবর উঁচু রাখবে, যেন বগল খুলে যায়। (আবু দাউদ)
অতঃপর নিম্নের দোয়া পাঠ করবেন_ আলহামদুলিল্লাহি রবি্বল আলামিন, আররহমানির রহিম, মালিকি ইয়াওমিদ্দিন। লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ইয়াফআলু মা ইউরিদু। আল্লাহুম্মা আনতাল্লাহু লাইলাহা ইল্লা আনতা। আনতাল গানিইয়ু ওয়া নাহনুল ফুকারাউ। আনজিল আলায়নাল গায়ছা ওয়াজ আল মা আনজালতা আলায়না কুউওয়াতাঁও ওয়া বালাগান ইলা হিন। অর্থ, 'সব প্রশংসা বিশ্বপালক আল্লাহর জন্য। যিনি করুণাময় ও কৃপানিধান। যিনি বিচার দিবসের মালিক। আল্লাহ ব্যতীত কোনো মাবুদ নেই। তিনি যা ইচ্ছা তাই-ই করেন। হে প্রভু! আপনি আল্লাহ। আপনি ব্যতীত কোনো উপাস্য নেই। আপনি অমুখাপেক্ষী ও আমরা সবাই মুখাপেক্ষী। আমাদের উপরে আপনি বৃষ্টি বর্ষণ করুন! যে বৃষ্টি বর্ষণ করবেন, তা যেন আমাদের জন্য শক্তির কারণ হয় এবং দীর্ঘমেয়াদি কল্যাণ লাভে সহায়ক হয়।
এ সময় বৃষ্টি দেখলে বলবে, আল্লাহুম্মা সাইয়িবান নাফেআন (হে আল্লাহ! উপকারী বৃষ্টি বর্ষণ করুন)। বৃষ্টিতে চাদর ভিজিয়ে আল্লাহর বিশেষ রহমত মনে করে আগ্রহের সঙ্গে তা বরণ করে নিতে হবে।

ইসতিসকার পদ্ধতি-২ : প্রথমে সংক্ষিপ্ত খুতবা দেবেন। অতঃপর দুই রাকাত সালাত আদায় করবেন। অতঃপর দাঁড়িয়ে আগে বর্ণিত নিয়ম অনুযায়ী দোয়া করতে থাকবেন।
চাদর উল্টানোর মধ্যে ইঙ্গিত রয়েছে যেন খরা উল্টে গিয়ে বৃষ্টিপাত হয়। এছাড়াও রয়েছে রাজাধিরাজ আল্লাহর সামনে বান্দার পরিবর্তিত অসহায় অবস্থার ইঙ্গিত। দাঁড়িয়ে দুই হাত উপুড় ও সোজাভাবে ধরে রাখার মধ্যে রয়েছে পালনকর্তা আল্লাহর প্রতি চূড়ান্ত আত্মসমর্পণ ও একান্তভাবে আত্মনিবেদনের ইঙ্গিত। ময়দানে বেরিয়ে একত্রিত হয়ে বৃষ্টি প্রার্থনার মধ্যে রয়েছে একই বিষয়ে হাজারো বান্দার ঐকান্তিক প্রার্থনার গুরুত্ববহ ইঙ্গিত।

নামাজ ব্যতীত অন্যভাবে বৃষ্টি প্রার্থনা
১ .জুমার খুতবা দানের সময় খতিব দুই হাত উঠিয়ে আল্লাহর কাছে বৃষ্টি প্রার্থনা করবেন। একইসঙ্গে মুসলি্লরা হাত উঠিয়ে দোয়া করবেন (অথবা 'আমিন', 'আমিন' বলবেন)। এ সময়ের সংক্ষিপ্ত দোয়া হলো আল্লাহুম্মা আগিছনা (হে আল্লাহ! আমাদের ওপর বৃষ্টি বর্ষণ করুন) কমপক্ষে ৩ বার। অথবা আল্লাহুম্মাসকিনা (হে আল্লাহ! আমাদের পানি পান করান) কমপক্ষে ৩ বার।
২.জুমা ও ইসতিসকার সালাত ছাড়াই স্রেফ দোয়ার মাধ্যমে বৃষ্টি প্রার্থনা করা। এ সময় দুই হাত তুলে হাদিসে বর্ণিত যে কোনো দোয়া পাঠ করবে।
৩.জীবিত কোনো মুত্তাকি পরহেজগার ব্যক্তির মাধ্যমে আল্লাহর কাছে বৃষ্টি প্রার্থনা করা যাবে। রাসূলুল্লাহ (সা.) এর মৃত্যুর পরে তাঁর চাচা আব্বাস (রা.) এর মাধ্যমে ওমর (রা.) বৃষ্টি প্রার্থনা করতেন। খ. ইসতিসকার খুতবা সাধারণ খুতবার মতো নয়। এটির সবটুকুই কেবল আকুতিভরা দোয়া আর তাকবির মাত্র।গ. অতিবৃষ্টি হলে বলবে, আল্লাহুম্মা ছাইয়েবান না-ফেআন (হে আল্লাহ! উপকারী বৃষ্টি বর্ষণ করুন)। । আর তাতে ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা দেখা দিলে তা ফিরিয়ে নেয়ার জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করে বলবে, আল্লাহুম্মা হাওয়া-লাইনা অলা আলাইনা। (হে আল্লাহ! আমাদের থেকে ফিরিয়ে নাও। আমাদের ওপর দিয়ো না)।

71


হাজত নামাজের নিয়ত

 


হাজত দুই-রাক'আত সুন্নত নামাজের নিয়ত সমূহঃ
আরবি-উচ্চারন
نَوَايْتُ اَنْ اُصَلِّىَ لِلَّّهِ تَعَالَى رَكْعَتَىْ صَلَوةِ الْحَجَاتِ سُنَّةُ رَسُوْلِ اللَّهِ تَعَالَى مُتَوَجِّهًا اِلَى جِهَةِ الْكَعْبَةِ الشَّرِيْفَةِ اَللَّهُ اَكْبَرُ

বাংলা-উচ্চারন
নাওয়াইতু আন উসালি্লয়া লিল্লাহি তা’আলা রাকা’আতাই সালাতিল হাজতি সুন্নাতু রাসূলিল্লাহি তা’আলা মুতাওয়াজ্জিহান ইলাজিহাতিল কাবাতিশ শারীফাতি আল্লাহু আকবার।

বাংলা অর্থ
আমি কিবলামুখী হয়ে আল্লাহর উদ্দেশ্যে দুই রাকাত হাজত নামাজ আদায় করছি। আল্লাহু আকবার।

হাজত নামাজ এর নিয়ম
মানুষের প্রয়োজনের যেমন শেষ নেই, তেমনি আশারও কোনো পরিমাপ নেই। আশা-নিরাশা, সুখ-দুঃখ ও দুশ্চিন্তা-হতাশা নিয়েই মানব জীবন। এতকিছুর পরও মানুষ স্বপ্ন দেখে, উন্নত জীবনের খোঁজে প্রতিনিয়ত চেষ্টা-তদবির করে। ইসলাম এ চেষ্টা তদবিরের বিরোধী নয়। বরং ইসলাম এমন পরিস্থিতিতেও মানুষকে দিক-নির্দেশনা প্রদান করেছে। যা নামাজের মাধ্যমে অর্জিত হয়। এ নামাজকে সালাতুল হাজত বা প্রয়োজনের মুহূর্তের নামাজ বলা হয়।
মানুষের বিশেষ কোনো কিছুর প্রয়োজন হলে কিংবা শারীরিক-মানসিকভাবে কোনো দুশ্চিন্তা দেখা দিলে এ নামাজ পড়তে হয়। এ নামাজ আদায়ের আলাদা কোনো নিয়ম নেই। স্বাভাবিক নামাজের মতোই উত্তমভাবে অজু করে দুই রাকাত নফল নামাজ পড়বে। নামাজ শেষে আল্লাহতায়ালার হামদ ও ছানা (প্রসংসা) এবং নবী করিম (সা.)-এর ওপর দরুদ শরিফ পাঠ করে নিজের মনের কথা ব্যক্ত করে আল্লাহর নিকট দোয়া করবে।
দোয়ার ক্ষেত্রে বিশেষভাবে হাদিস শরিফে নিন্মোক্ত দোয়া পাঠের বর্ণনা আছে।

দোয়াটি হলো—
لا إله إلا الله الحليم الكريم سبحان الله رب العرش العظيم الحمد لله رب العالمين. أسالك موجبات رحمتك وعزائم مغفرتك والغنيمة من كل بر والسلامة من كل إثم لا تدع لي ذنباً إلا غفرته ولا هما إلا فرجته ولا حاجة هي لك رضا إلا قضيتها يا أرحم الراحمين

উচ্চারণঃ ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহুল হালিমুল কারিম, সুবহানাল্লাহি রাব্বিল আরশিল আজিম। আলহামদুলিল্লাহি রাব্বিল আলামিন, আছআলুকা মুজিবাতি রাহমাতিক; ওয়া আজা-ইমা মাগফিরাতিক, ওয়াল গানিমাতা মিন কুল্লি বিররিউ ওয়াস‌ সালামাতা মিন কুল্লি ইছমিন লা তাদাঅলি- জাম্বান ইল্লা গাফারতাহু ওয়ালা হাম্মান ইল্লা ইল্লা ফাররাজতাহু ওয়ালা হাজাতান হিয়া লাকা রিজান- ইল্লা কাজাইতাহা ইয়া আর হামার রাহিমীন।

72


শুকুরিয়া নামাজের নিয়ত

 

শুকুরিয়া  দুই-রাক'আত সুন্নত নামাজের নিয়ত সমূহঃ
● আরবি-উচ্চারন
نَوَايْتُ اَنْ اُصَلِّىَ لِلَّّهِ تَعَالَى رَكْعَتَىْ صَلَوةِ الشُّكْرِ مُتَوَجِّهًا اِلَى جِهَةِ الْكَعْبَةِ الشَّرِيْفَةِ اَللَّهُ اَكْبَرُ

● বাংলা-উচ্চারন
নাওয়াইতু আন উসালি্লয়া লিল্লাহি তা’আলা  রাকা’আতাই সালাতিল শুকুরি  মুতাওয়াজ্জিহান ইলাজিহাতিল কাবাতিশ শারীফাতি আল্লাহু আকবার।

● বাংলা অর্থ
আমি কিবলামুখী হয়ে আল্লাহর উদ্দেশ্যে দুই রাকাত শুকুরিয়া নামাজ আদায় করছি। আল্লাহু আকবার।

73


কাযা নামাজের নিয়ত

 


কাযা নামাজ এবং ওয়াক্তিয়া নামাজের নিয়ত একই রকম তবে এইটুক পার্থক্য যে কাযা নামাজে (আন উসালি্লয়া) শব্দের জায়গায় (আন আকদিয়া) এবং যে নামাজ তাহার নাম বলিয়া (আল ফাইতাতে বলিতে হইবে।
যথা- ফরজ অথবা আছরের নামা্জ কাযা হইলে নিম্নরূপ নিয়ত পড়তে হবে

ফজর নামাজের কাযার-দুই-রাক'আত ফরজ এর নিয়ত

● আরবি-উচ্চারন
نَوَايْتُ اَنْ اَقْضِ لِلَّّهِ تَعَالَى رَكْعَتَىْ صَلَوةِ الْفَجْرِالْفَائِتَةِ فَرْضُ اللَّهِ تَعَالَى مُتَوَجِّهًا اِلَى جِهَةِ الْكَعْبَةِ الشَّرِيْفَةِ اَللَّهُ اَكْبَرُ

● বাংলা-উচ্চারন
নাওয়াইতুয়ান আকদিয়া লিল্লাহি ত’আলা রাকাআতি ছালাতিল ফাজরি ফায়েতাতি ফারযুল্লাহি তা’আলা মোতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কাবাতিশ শারীফাতি আল্লাহু আকবার।

● বাংলা অর্থ
আমি কিবলামুখী হয়ে আল্লাহর উদ্দেশ্যে ফজরের ফরজ দুই রাকাত কাযা নামাজ আদায় করছি। আল্লাহু আকবার।
আছর নামাজের কাযার-চার-রাক'আত ফরজ এর নিয়ত

● আরবি-উচ্চারন
نَوَيْتُ اَنْ اَقْضِىَ لِلَّهِ تَعَا لَى اَرْبَعَ رَكْعَاتِ صَلَوةِ الْعَصْرِ الْفَا ئِتَةِ فَرْضُاللَّهِ تَعَا لَى مُتَوَجِّهًا اِلَى جِهَةِ الْكَعْبَةِالشَّرِيْفَةِ اَللَّهُ اَكْبَرُ

● বাংলা-উচ্চারন
নাওয়াইতুয়ান আকদিয়া লিল্লাহি ত’আলা আরবায়া রাকাআতি ছালাতিল আছরিল ফায়েতাতি ফারযুল্লাহি তা’আলা মোতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কাবাতিশ শারীফাতি আল্লাহু আকবার।

● বাংলা অর্থ
আমি কিবলামুখী হয়ে আল্লাহর উদ্দেশ্যে আছরের ফরজ চার রাকাত কাযা নামাজ আদায় করছি। আল্লাহু আকবার।

● কাযা নামাজ এর নিয়ম
যে কোন জরুরী কারণে সময়মত নামাজ পড়তে না পারিলে ঐ নামাজ অন্য নামাযের পূর্বে আদায় করাকে কাযা নামাজ বলে।

কাযা নামাজ দুই প্রকার যথা-
১। ‘ফাওয়ায়েতে কালীল’ অর্থাৎ অল্প কাযা পাঁচ ওয়াক্ত পরিমাণ নামাজ কাযা হইলে উহাকেই ‘ফাওয়ায়েতে কালীল’ বা অল্প কাজা বলে।
২। ‘ফাওয়ায়েতে কাছির’ অর্থাৎ বেশি কাযা। পাঁচ ওয়াক্তের অধিক যত দিনের নামাজই কাযা হউক না কেন উহাকে ‘ফাওয়ায়েতে কাছির’ বা অধিক কাযা বলা হয়। এ ধরনের কাযা নামাজ সকল ওয়াক্তিয়া নামাযজর পূর্বে পড়িবে । কিন্তু, (ক) কাযার কথা ভুলিয়া গেলে অথবা খ) ওয়াক্তিয়া নামাযজর ওয়াকত সস্কীর্ণ হইয়া গেলে বা গ) কাযা পাঁচ ওয়াক্তের বেশী হইলে কাযা নামাজ পরে পড়া যাইতে পারে।

পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ বা তার কম নামাজ না পড়িয়া থাকিলে তাহার তরতীবের প্রতি লক্ষ্য রাখিতে হইবে। আগের নামাজ আগে, পরের নামাজ পরে পড়িতে হইবে। যথঃ কোন ব্যক্তির ফরজ এবং যোহরের নামাজ তরক হইয়া গিযাছে; এখন আছরের নামাজ পড়িবার পূর্বে সর্ব প্রথম ফজরের কাযা তারপর যোহরের কাযা আদায় করিতে হইবে। তারপর আছরের ওয়াক্তিযা নামাজ আদায় করিবে।
১) ফরয নামাজের কাযা ফরয।
২) ওয়াজিব নামাজের কাযা ওয়াজিব।
৩) সুন্নত নামাযের কাযা পড়িতে হয় না। কিন্তু ফজরের সুন্নতের কাযা আদায় করিতে হইব।
৪) কাযা নামাজ জামায়াতের সহিত আদায় করিলে ইমাম কেরাত জোরে পড়িবেন। তবে যোহর এবং আছরে চুপে চুপে পড়িবেন।
৫) এক মাস বা তার চেয়ে বেশী দিনের নামাজ কাযা হইয়া থাকিলে উক্ত পরিমাণ সময়ের কাযা আদায় করিবে এবং তরতীবের প্রতি লক্ষ্য রাখিবে।
৬) জীবনে যে নামাজ পড়ে নাই বা কত নামাজ তরক করিয়াছে তাহার হিসাবও নাই। সে যদি এখন কাযা করিতে চায়, তবে প্রথমে নামাজের পূর্বে তরতীব অনুযায়ী কাযা আদায় করিতে থাকিব, ইহাকে ‘ওমরী কাযা’ বলে। ইহাতে অশেষ ছওয়াব আছে। কাযা নামাজের নিয়ত করিবার সময় নামাজের উল্লেখ করিয়া নিয়ত করিতে হইবে।

74


নফল নামাজের নিয়ত


নফল এর দুই-রাক'আত নামাজের নিয়ত সমূহ
● আরবি-উচ্চারন
نَوَايْتُ اَنْ اُصَلِّىَ لِلَّّهِ تَعَالَى رَكْعَتَىْ صَلَوةِ النَّفْلِ مُتَوَجِّهًا اِلَى جِهَةِ الْكَعْبَةِ الشَّرِيْفَةِ اَللَّهُ اَكْبَرُ

● বাংলা-উচ্চারন
নাওয়াইতু আন উসালি্লয়া লিল্লাহি তা’আলা রাকা’আতাই সালাতিল নফলে মুতাওয়াজ্জিহান ইলা-জিহাতিল কাবাতিশ শারীফাতি আল্লাহু আকবার।

● বাংলা অর্থ
আমি কিবলামুখী হয়ে আল্লাহর উদ্দেশ্যে দুই রাকাত নফল নামাজ আদায় করছি।আল্লাহু আকবার।

75


বেতর নামাজের নিয়ত

 


এশার তিন-রাকাত বেতর নামাজের নিয়ত সমূহঃ

আরবি-উচ্চারন
نَوَيْتُ اَنْ اُصَلِّىَ لِلَّهِ تَعَا لَى ثَلَثَ رَكْعَتِ صَلَوةِ الْوِتْرِوَاجِبُ اللَّهِ تَعَا لَى مُتَوَجِّهًا اِلَى جِهَةِ الْكَعْبَةِ الشَّرِ يْفَةِ اَللَّهُ اَكْبَرُ

বাংলা-উচ্চারন
নাওয়াইতুয়ান উসালি্লয়া লিল্লাহি তা’আলা সালাছা রাকায়াতি ছালাতিল বিতরে ওয়াজিবুল্লাহি তা’য়ালা মোতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কা’বাতিশ্ শারীফাতি আল্লাহু আকবার।

বাংলা অর্থ
আমি কিবলামুখী হয়ে আল্লাহর উদ্দেশ্যে তিন রাকাত বেতের ওয়াজিব নামাজ আদায় করছি।আল্লাহু আকবার।
দোয়া কুনুত-বিতরের নামাজে পড়তে হয়ঃ

আরবি-উচ্চারন
اَللَّمُمَّ اِنَّ نَسْتَعِيْنُكَ وَنَسْتَغْفِرُكَ وَنُؤْمِنُ بِكَ وَنَتَوَكَّلُ عَلَيْكَ وَنُثْنِىْ عَلَيْكَ الْخَيْرَ وَنَشْكُرُكَ وَلاَ نَكْفُرُكَ وَنَخْلَعُ وَنَتْرُكُ مَنْ يَّفْجُرُكَ-اَللَّهُمَّ اِيَّاكَ نَعْبُدُ وَلَكَ نُصَلِّىْ وَنَسْجُدُ وَاِلَيْكَ نَسْعَى وَنَحْفِدُ وَنَرْجُوْ رَحْمَتَكَ وَنَخْشَى عَذَابَكَ اِنَّ عَذَابَكَ بِالْكُفَّارِ مُلْحِقٌ

বাংলা-উচ্চারন
আল্লাহুম্মা ইন্না নাসতাঈনুকা ওয়ানাসতাগফিরুকা ওয়ানু‘মিনুবিকা ওয়ানাতাওয়াক্কালু আ‘লাইকা ওয়ানুছনি আ‘লাইকাল খইর, ওয়ানাশকুরুকা ওয়ালানাকফুরুকা ওনাখলা‘উ ওয়ানাতরুকু মাঈয়াফ যুরুকা, আল্লাহুম্মা ইয়্যা কানা‘বুদু ওয়ালাকানুসল্লি ওয়ানাসযুদু ওয়ালাইকানাস‘আ ওয়ানাহফিদু ওনারযু রাহমাতাকা ওয়ানাখশা আ‘যাবাকা ইন্না আ‘যাবাকা বিলকুফ্ফারি মুলহিক।

বাংলা অর্থ
হে আল্লাহ!আমরা তোমার নিকট সাহায্য প্রার্থনা করিতেছি,তোমার নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করিতেছি,তোমার ভরসা করিতেছি । তোমার নিকট ক্ষমা ভিক্ষা করিতেছি,তোমার উপর ঈমান আনিতেছি,তোমার ভরসা করিতেছি তোমার গুণগান করিতেছি এবং তোমারই কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করিতেছি । আমরা তোমাকে অস্বীকার করি না । যাহারা তোমার হুকুম অমান্য করে তাহাদের সঙ্গে আমরা সংশ্রব সংসগ্র পরিত্যাগ করি । হে আল্লাহ!আমরা তোমারই ইবাদত করি,তোমারই খেদমতে হাজির হই এবং তোমার রহমতের আশা করি ও তোমার শাস্তিকে ভয় করি । নিশ্চই তোমার আজাব অবিশ্বাসিগণ ভোগ করিবে ।

English meaning
“O’ Allah! We implore You for help and beg forgiveness of You and believe in You and rely on You and extol You and we are thankful to You and are not ungrateful to You and we alienate and forsake those who disobey You. O’ Allah! You alone do we worship and for You do we pray and prostate and we take to please You and present ourselves for the service in Your cause and we hope for Your mercy and fear Your chastisement. Undoubtedly, Your torment is going to overtake infidels”
বিঃদ্রঃ-বিতর নামাজের শেষ রাকাতের তাকবীরের পরে (বিসমিল্লাহ্ ব্যতীত)দোয়া কুনূত পড়তে হয়।এক্ষেএে অন্য কোন সূরা পড়া যাবে না।তবে যাদের দোয়া কুনূত মুখস্ত নেই তারা মুখস্ত করার আগ পর্যান্ত পড়তে হবে।

আরবি-উচ্চারন
رَبَّنَآاَتِنَا فِى الدُّنْيَا حَسَنَةً وَّفِى اْلاَخِرَةِ حَسَنَةً وَّقِنَاعَذَابَ النَّارِ
বাংলা-উচ্চারন
রাব্বানা আতিনা ফিদ্দুনইয়া হাসানাতাওঁ ওয়া ফিল আখিরাতি হাসানাতাওঁ ওয়া ক্বিনা আ'যাবান্নার।

বাংলা অর্থ
হে আমাদের পালনকর্তা! আমাদেরকে ইহকালের মঙ্গল এবং পরকালের শান্তি দান করুন এবং আমাদেরকে দোযখের আগুন হতে রক্ষা করুন।

English meaning
Our Allah,give us in this world [that which is] good and in the Hereafter [that which is] good and protect us from the punishment of the Fire.
অথবা তিনবার বলবে-

আরবি-উচ্চারন
اَللَّهُمَ اغْفِرْلِيْ

বাংলা-উচ্চারন
আল্লা-হুম্মাগ-ফিরলী

বাংলা অর্থ
হে আল্লাহ্!আমাকে ক্ষমা কর
English meaning
O Allah, forgive me

বেতের নামাজের বিবরন

বেতের নামাজের সময় বিভিন্ন ইমামা সাহেব-গনের মতে বেতরের নামাজ এশার নামাজের পর থেকে সুবহি সাদিকের পূর্ব মুহুর্ত পর্যন্ত থাকে। কিন্তু আমাদের ইমাম আবু হানিফা (রহঃ) এর মতে এশারের বেতের নামাজের একই সময়।
বেতেরের নামাজ নির্দিস্ট সময়ের মধ্যেই আদায় করতে হয় । কিন্তু যারা শেষ রাতে তাহাজ্জুদ নামাজ আদায়ের উদ্দেশ্যে জাগ্রত থাকার অভ্যাস করেছেন,কেবল ঐ সব লোকেরাই শেষ রাতে তাহাজ্জুদের পর বেতেরের নামাজ আদায় করতে পারেন। কেননা রাসুলে করীম (সাঃ)এই নিয়মেই আদায় করতেন । আর যাদের শেষ রাতে ঘুম হতে জাগ্রত হওয়ার অভ্যাস নেই,তারা অবশ্যই এশার নামাজের সাথে আদায় করবেন।
বেতের নামাজ পড়ার নিয়ম

বেতেরের তিন রাকাত নামাজের নিয়্যত করে তাকবীরে তাহরীমা বেঁধে যথারীতি দু-রাকা'আতের পর বসে তাশাহুদ পাঠ করে দাঁড়িয়ে তৃতীয় রাক'আতে সূরা-কিরায়াত পাঠ করে পুনরায় তাহরীমা বেঁধে দোয়ায়ে কুনূত পাঠ করে যথারীতি রুকূ-সিজদাহ ও শেষে বৈঠকের পর সালাম ফিরিয়ে নামাজ সমাপ্ত করবেন।

76


সিজদা সাহু এর নিয়ম

 


সিজদা সাহু এর নিয়ম

আপনার নামা্জ/সালাতের ভিতর যদি কোন ওয়াজীব তরক হয়ে যায় তাইলে আপনাকে অবশ্যই সাহু সিজদা দিতে হবে। যদি না দেন তাইলে আপনার নামায হবে না। সাহু সিজদা দেয়ার নিয়ম হল শেষ রাকাতে আত্তাহিয়্যাতু পড়ে শুধু ডান দিকে সালাম ফিরিয়ে ২ টি সিজদা দিতে হবে। ২ সিজদার মাঝখানে অবশ্যই ১ তাসবীহ পরিমান সোজা হয়ে বসতে হবে। তারপর যথারীতি আবার আত্তাহিয়্যাতু, দুরুদ শরীফ ও দোয়া মাসুরা পড়ে নামায শেষ করতে হবে। তবে নামা্জ যদি কোন ফরয তরক হয়ে যায় তাইলে সাহু সিজদা দিয়ে কোন লাভ হবে না। আবার নতুন করে নামাজ পড়তে হবে। অনেককেই দেখা যায় কোন কারন ছাড়াই সব নামা্জের শেষে একটা সাহু সিজদা দিয়ে দেয়। এটা ঠিক নয়। আমি এখানে সহজ ভাবে নামাজ কখন সাহু সিজদা দিতে হবে আর কখন দিতে হবে না এই মাসলা- মাসায়েল গুলি নিয়ে আলোচনা করবো। সাহু সিজদার এই মাসলা গুলি ছেলে মেয়ে উভয়ের নামা্জের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। তবে আপনি যদি জামাতে নামাজ পড়েন তাইলে ইমাম সাহেব যদি সাহু সিজদা দেয় তাইলে আপনি দিবেন। আর যদি আপনি জামাতে মাসবুক মানে ১ রাকাত পরে উপস্থিত হন আর যদি আপনার নিজে পড়ার রাকাতে কোন ওয়াজীব তরক হয়ে যায় তাইলে আপনি সাহু সিজদা দিবেন।

১.ফরজ নামাজের প্রথম ২ রাকাতে সুরা ফাতেহা পড়া ওয়াজীব। যদি আপনি ফরজ নামাজের প্রথম রাকাত বা ২য় রাকাত বা উভয় রাকাতেই সুরা ফাতেহা ভুল বশত না পড়েন তাইলে আপনাকে সাহু সিজদা দিতে হবে। আবার ফরজ নামাযের ৩য়/৪র্থ রাকাতে সুরা ফাতেহা পড়া সুন্নত। আপনি যদি যে কোন ফরজ নামাজের ৩য়/৪র্থ রাকাতে সুরা ফাতেহা ভুল বশত নাও পড়েন তাইলে আপনাকে সিজদায়ে সাহু দিতে হবে না।

২. ফরজ নামাজের প্রথম ২ রাকাতে সুরা ফাতেহা পড়ার পর অন্য একটি সুরা মিলানো ওয়াজীব। যদি আপনি ভুল বশত ফরজ নামাজের প্রথম ২ রাকাতে সুরা ফাতেহা পড়ার পর অন্য কোন সূরা না পড়েন তাইলে আপনাকে সিজদায়ে সাহু দিতে হবে। আবার ফরজ নামাযের ৩য়/৪র্থ রাকাতে সুরা ফাতেহা পড়ার পর অন্য কোন সুরা পড়ার নিয়ম নেই। তবে আপনি ভুল বশত ফরজ নামাযের ৩য়/৪র্থ রাকাতে সুরা ফাতেহা পড়ার পর অন্য কোন সুরা পড়ে ফেললে সিজদায়ে সাহু দিতে হবে না।

৩.সুন্নত ও নফল স্কল নামাজেই সকল রাকাতেই সুরা ফাতেহা পড়া ও সুরা ফাতেহা পড়ার পর অন্য একটি সুরা মিলানো ওয়াজীব।আপনি যদি যে কোন সুন্নত/নফল নামাযের যে কোন রাকাতে সুরা ফাতেহা বা সুরা ফাতেহার পর অন্য একটি সুরা না পড়েন তাইলে আপনি একটি ওয়াজীব তরক করলেন। আপনাকে অবশ্যই সিজদায়ে সাহু দিতে হবে।

৪.ভুল করে যে কোন রাকাতে ২ রুকু বা ৩ সিজদা দিলে সিজদায়ে সাহু দিতে হবে।

৫.সুরা ফাতেহা পড়ার পর এখন কি সুরা পড়বো এই চিন্তায় যদি ৩ তসবীহ পরিমান সময় চলে যায় তাইলে সিজদায়ে সাহু দিতে হবে। অথবা কোন সুরার কোন আয়াত ভুলে গেছেন ঐ আয়াত কে স্মরন করার জন্য যদি ৩ তসবীহ পরিমান সময় চলে যায় তাইলে সিজদায়ে সাহু দিতে হবে।ফরয ও সুন্নত নামাযের ১ম বৈঠকে যদি ভুলে ২ বার আত্তাহিয়্যাতু পড়ে ফেলেন তাইলে সিজদায়ে সাহু দিতে হবে। আবার ফরয ও সুন্নত নামাযের ১ম বৈঠকে আত্তাহিয়্যাতু পড়ার পর যদি দুরুদ শরীফের আল্লাহুম্মা সাল্লি আলা মুহাম্মাদ পর্যন্ত পড়ে ফেলেন তাইলে শেষ বৈঠকে সিজদায়ে সাহু দিতে হবে। তবে এরচেয়ে কম পড়ে ফেললে সিজদায়ে সাহু দিতে হবে না। তবে নফল নামাযের যেকোন বৈঠকে ২ বার আত্তাহিয়্যাতু পড়ে ফেললে সিজদায়ে সাহু দিতে হবে না।

৬.যে-কোন বৈঠকে আত্তাহিয়্যাতু পড়ার সময় যদি ভুলে সুরা ফাতেহা পড়ে ফেলেন তাইলে সিজদায়ে সাহু দিতে হবে। তবে নিয়ত বাধার সময় ছানার বদলে ভুলে দোয়া কুনুত পড়ে ফেললে সিজদায়ে সাহু দিতে হবে না।

৭.৩/৪ রাকাত বিশিষ্ট নামাযে প্রথম বৈঠক ভুলে গেছেন এবং ৩য় রাকাতের জন্য দাঁড়িয়ে গেছেন, যদি অর্ধেকের কম দাঁড়িয়ে থাকেন তাইলে বসে পড়বেন এবং আত্তাহিয়্যাতু পড়ে ৩য় রাকাতের জন্য দাড়াবেন। এই অবস্থায় সিজদায়ে সাহু দিতে হবে না। আর যদি অর্ধেকের বেশি দাঁড়িয়ে যান তাইলে আর বসবেন না। ৩/৪ রাকাত নামায শেষ করে শেষ বৈঠকে সিজদায়ে সাহু দিবেন।

৮.যোহর ও এশার ৪র্থ রাকাতে বসতে মনে নাই। একদম সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে ৫ম রাকাতের জন্য দাঁড়িয়ে গেছেন। তাও মনে হবার সাথে সাথে বসে পড়বেন। আত্তাহিয়্যাতু ও দুরুদ শরীফ পড়ে সালাম ফিরাবেন। এক্ষেত্রে সিজদায়ে সাহু দিতে হবে না।আর যদি ৫ম রাকাতে সুরা ফাতেহা পড়ে ফেলেন এবং রুকুও করে ফেলেন তাইলেও বসে পড়বেন। এই অবস্থায় সিজদায়ে সাহু দিতে হবে। আর যদি রুকু করার পরও মনে না হয় তাইলে আরো ২ রাকাত পড়ে মোট ৬ রাকাত পড়বেন। এক্ষেত্রে শেষ ২ রাকাত নফল ও প্রথম ৪ রাকাত ফরয হিসাবে আদায় হল। কিন্তু আসরের নামাযে ৪র্থ রাকাতে এই রকম ভুল হলে মোট ৬ রাকাতই পড়বেন কিন্তু ঐ ৬ রাকাত পুরাটাই নফল হবে। কারন আসর নামাযের পর কোন নফল নামায নাই। এক্ষেত্রে আপনাকে পুনরায় আসরের নামায পড়তে হবে।

৯. নামাজ ৩ রাকাত পড়েছেন না ৪ রাকাত পড়েছেন এই রকম সন্দেহ যদি সব সময় হয়ে থাকে তাইলে এই সন্দেহের কোন ভিত্তি নাই। আর যদি হঠাৎ করে এই সন্দেহ হয় তাইলে এই রাকাত কে ৩য় রাকাত ধরে আরেক রাকাত পড়ে নিবেন। আর মন যদি ৪র্থ রাকাতের দিকে সায় দেয় তাইলে আরেক রাকাত পড়ার দরকার নেই। এই অবস্থায় সিজদায়ে সাহু দিতে হবে না। আবার ১ম রাকাত পড়লেন না ২য় রাকাত পড়লেন এই রকম সন্দেহ যদি সব সময় হয়ে থাকে তাইলে এই সন্দেহের কোন ভিত্তি নাই। আর যদি হঠাৎ করে এই সন্দেহ হয় তাইলে এই রাকাত কে ১ম রাকাত ধরে আত্তাহিয়্যাতু পড়বেন। কারন এটা ২য় রাকাতও হতে পারে। আবার ২য় রাকাতেও আত্তাহিয়্যাতু পড়বেন।কারন এটা ২য় রাকাত হতে পারে। আবার ৩য় রাকাতেও আত্তাহিয়্যাতু পড়বেন।কারন এটা ৪র্থ রাকাত হতে পারে। তারপর ৪র্থ রাকাতে সিজদায়ে সাহু করে সালাম ফিরাবেন।

১০.নামাজ শেষ হওয়ার পর সালাম ফিরানোর পর যদি নামায ৩ রাকাত পড়েছেন না ৪ রাকাত পড়েছেন এই রকম সন্দেহ যদি সব সময় হয়ে থাকে তাইলে এই সন্দেহের কোন ভিত্তি নাই।আর যদি স্পষ্ট ভাবে মনে পড়ে যে নামাজ ৩ রাকাত পড়েছেন এবং আপনি কিবলামুখি হয়ে বসে আছেন এবং কারো সাথে কথা বলেন নি তাইলে সাথে সাথে দাঁড়িয়ে যেয়ে আরেক রাকাত পড়ে সিজদায়ে সাহু করে সালাম ফিরাবেন। তবে কারো সাথে কথা বলে ফেললে নামায পুনরায় পড়তে হবে।

১১.একই নামা্জে সিজদায়ে সাহু করার একাধিক কারন পাওয়া গেলেও একটি সিজদায়ে সাহু করলেই হবে।

১২.বিতর নামাজের দোয়া কুনুত না পড়েই রুকুতে চলে গেছেন বা দোয়া কুনুতের জায়গায় অন্য কিছু পড়ে ফেলেছেন তাইলে সিজদায়ে সাহু দিতে হবে। আর যদি দোয়া কুনুতের জায়গায় অন্য কিছু পড়ে ফেলেছেন কিন্তু মনে হবার সাথে সাথে দোয়া কুনুত পড়ে ফেলেছেন তাইলে সিজদায়ে সাহু দিতে হবে না।

77


মাসবুক এর নিয়ম

 

 

মাসবুক কি?
জামাতে নামাজ শুরু হবার পর কোন ব্যক্তি যদি ইমামের সাথে কোন রাকাত পড়তে না পারে (বিলম্বে মসজিদে পৌঁছার দরুন বা অন্য যে কোন কারণে) তবে সেই ব্যক্তি শরীয়তের ভাষায় মাসবুক । কোন রাকাতের রুকু পেলেই সেই রাকাত পেয়েছে বলে গণ্য হবে ।

 

মাসবুকের নামাজের নিয়ম
১।ইমামের সাথে সে সালাম ফিরাবে না । ইমাম প্রথম সালাম সম্পূর্ণ করার পর সে দাড়িয়ে যাবে ।

 

২.এরপর মাসবুক তার নামাজের যতটুকু বাকি আছে তা সম্পূর্ণ করে তাশাহুদ,দরুদ,দুআ মাসূরা পড়ে সালাম ফিরিয়ে সাধারণ ভাবে নামা্জ শেষ করবে ।

 

৩.কিরা-আত পড়ার ব্যাপারে মাসবুক তার যে কয় রাকাত বাকি আছে তা অনুসরণ করবে । এক রাকাত বাকি থাকলে সূরা ফাতিহা ও অন্য একটি সূরা মিলিয়ে পড়বে । দুই রাকাত বাকি থাকলে উভয় রাকাতে সূরা ফাতিহা ও আপর সূরা মিলিয়ে পড়বে । তিন রাকাত বাকি থাকলে প্রথম দুই রাকাতে সূরা ফাতিহার সাথে অপর সূরা মিলাবে কিন্তু তৃতীয় ছুটে যাওয়া রাকাতে কেবল সূরা ফাতিহা পড়বে ।

 

৪.বৈঠকের ব্যাপারে মাসবুক ইমামসহ যে কয় রাকাত নামাজ পড়েছে তা হিসেব করে বৈঠকে যাবে । প্রতি জোড় রাকাত শেষে বৈঠকে বসতে হয় । তাই যে কেবল এক রাকাত পেল ইমামের সাথে সে ইমামের নামাজ শেষ করার পর দাড়িয়ে নিজে এক রাকাত পড়ে সেজদা সম্পন্ন করার পর বসে তাশাহুদ পড়বে কারণ এটা তার নামাজের দ্বিতীয় রাকাত । এরপর সাধারণ ভাবে নামা্জ শেষ করবে ।

 

 




 
 
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
নবীনতর পূর্বতন